রমজান মাসে রাতের বেলা তারাবির নামাজ আদায় করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
হাদিস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه
অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করবে তার অতীতের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেওয়া হবে।
রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজ, তাদের উপর তারাবির নামাজ সুন্নত ।কিন্তু অনেক মুসলমান তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে অবগত নয়। তাই তারাবির নামাজ কিভাবে পড়তে হয় নিম্নে তা উল্লেখ করা হল।
মূলত পবিত্র রমজান মাসে এশারের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পরে বেতেরের আগে এই নামাজ পড়তে হয়। এই নামাজের বিশেষ কোন নিয়ম নেই কিংবা নির্ধারিত কোন সূরা ও নেই বরং অন্যান্য নামাজের মত
দুই রাকাত করে দশ সালামে বিশ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তে হয় এবংপ্রতি চার রাকাত পর পর চার রাকাত নামাজের সমপরিমাণ সময় বিরতি দিতে হয় কিন্তু যদি এই পরিমাণ বিরতির কারণে মানুষের কষ্ট হয় কিংবা তারাবির জামাতে লোক কম হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে এর চেয়ে কোন সময় বিরতি নেওয়া যাবে তাতে কোন সমস্যা নেই।
তারাবির নামাজের নিয়ত
نويت أن أصلي لله تعالى ركعتي صلوة التراويح سنة رسول الله متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
উচ্চারণ নাওইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা কাবাতিস শারীফাহ।
যদি কেউ আরবিতে নিয়ত করতে না পারে তাহলে বাংলাতে নিয়ত করে নিলেও চলবে।
তারাবির নামাজে চার রাকাত পর পর বিরতির সময় এই দোয়া পড়তে হয়।
سبحان ذي الملك والملاكوت سبحان العزت والعظمت الهيبة والقدرة و الكبرياء والجبروت سبحان الملك القدوس الحي الذي لا ينام ولا يموت سبوح قدوس ربنا ورب الملائكه والروح
উচ্চারণঃ সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাল ইজ্জত ওয়াল আজমাতি ওয়াল হাই বাতি ওয়াল কুদরতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়াল জাবারুতি সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুসিল হাইয়িল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু ছুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা ওয়া রব্বুল মালাইকাতি ওয়াল রুহ।
তারাবির নামাজের মোনাজাত।
اللهم إنا نسألك الجنة ونعوذ بك من النارياخالق الجنة والنار برحمتك يا عزيز يا غفار يا كريم يا ستار يا رحيم يا جبار يا خالق يا بار اللهم اجرنا من النار يا مجير يا مجير يا مجير برحمتك يا أرحم الراحمين
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস আনুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান্নার ইয়া খালিকাল জান্নাতি ওয়ান্নার বিরাহমাতিকা ইয়া আজিজু ইয়া গাফফারু ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার ইয়া রহীমু ইয়া জাব্বারু ইয়া খালিকু ইয়া বাররু আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নার ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
আমাদের মধ্যে অনেকের ভুল ধারণা বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে অনেকেই দোয়া ও মোনাজাত মুখস্ত না থাকার কারণে তারাবির নামাজ ছেড়ে দেয়। অথচ দোয়া এবং মোনাজাত মুখস্থ থাকা জরুরি নয় তারাবির নামাজে চার রাকাত পর পর যে বিরতি নেওয়া হয় এ সময় যে কোন দোয়া পড়া যায় সুবহানাল্লাহ পড়া যায় আলহামদুলিল্লাহ পড়া যায়। এমন কি কোন ব্যক্তি যদি কোন কিছুই না পড়ে তাতেও কোন সমস্যা নেই তারাবির নামাজ হয়ে যাবে।
মহিলাদের তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম
মহিলারা তাদের নিজের ঘরে একা একা তারাবির নামাজ আদায় করবে। তারা পুরুষদের মত মসজিদে গিয়ে কিংবা কয়েকজন মহিলা একত্র ে তারাবির নামাজ আদায় করবে না কেননা হাদিস শরীফে ফরজ নামাজ জামাতের সাথে পড়ার অনেক ফজিলত গুরুত্ব রয়েছে তা সত্ত্বেও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে তাদের নিজ ঘরের অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করা উত্তম বলেছে। হাদিস শরীফ এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একজন মহিলা আসলো এবং বলল হে আল্লাহর রাসূল আমি আপনার পিছনে নামাজ পড়তে পছন্দ করি রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমিও জানি যে তুমি আমার পিছনে নামাজ পড়তে পছন্দ কর কিন্তু তোমার ঘরের অভ্যন্তরে নামাজ পড়া বাইরের কামড়ায় নামাজ পড়ার থেকে উত্তম
তোমার ঘর থেকে কোঠরির মধ্যে নামাজ পড়া উত্তম।
অন্য হাদিসে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
خير نساء الصلاه في قعر بيوتهن
অর্থাৎ মহিলাদের উত্তম নামাজ হলো যাহা ঘরের অভ্যন্তরে পড়া হয়।
সুতরাং মহিলারা তারাবির নামাজ তাদের নিজ ঘরে পড়াই উত্তম হবে।
0 Comments